রাইস ওয়াটার ফর স্কিন, এর গোপন ও যাদুকরী গুন এবং তৈরি করণ
চন্দনের উপকারিতা অপকারিতা এবং রূপচর্চার নিয়মরাইস ওয়াটার ফর স্কিন, এই আর্টিকেলে আমরা রাইস ওয়াটারের বিভিন্ন উপকারিতা এর
ব্যবহার পদ্ধতি এবং ঘরোয়া উপায়ে রাইস ওয়াটার তৈরির সহজ পদ্ধতি নিয়ে বিস্তারিত
আলোচনা করব। প্রাকৃতিক এই উপাদানটি কিভাবে আপনার সৌন্দর্য চর্চায় অংশ হতে পারে
তা জানতে আশা করছি আপনি শেষ পর্যন্ত আমাদের সাথে থাকবেন।
তাহলে চলুন আর দেরি না করে রাইস ওয়াটার এর বিভিন্ন গোপন ও যাদুকরি গুণ এবং
প্রস্তুত প্রণালী সম্পর্কে বিস্তারিত জেনে আসি।
পোস্ট সূচীপত্রঃ রাইস ওয়াটার ফর স্কিন
- রাইস ওয়াটার ফর স্কিন, এর গোপন ও যাদুকরী গুন
- রাইস ওয়াটার এর মাধ্যমে ত্বকের প্রাকৃতিক উজ্জ্বলতা বৃদ্ধি
- রাইস ওয়াটারের মাধ্যমে অ্যান্টি-এজিং এর প্রাকৃতিক সমাধান
- ত্বকের পিএইচ ব্যালেন্স রক্ষায় রাইস ওয়াটার এর অবদান
- রাইস ওয়াটারের মাধ্যমে ব্রণ ও ফুসকুড়ি নিয়ন্ত্রণে চমৎকার সমাধান
- রাইস ওয়াটারের মাধ্যমে সানবার্ন প্রতিরোধে প্রাকৃতিক শীল্ড
- রাইস ওয়াটার চুলের স্বাস্থ্য ও সৌন্দর্য বৃদ্ধিতে অসাধারণ সমাধান
- রাইস ওয়াটার ত্বকের দাগ ও কালো ছোপ দূর করার প্রাকৃতিক উপায়
- রাইস ওয়াটারের মাধ্যমে সেনসিটিভ স্কিনের জন্য নিরাপদ সমাধান
- রাইস ওয়াটারের মাধ্যমে ত্বকের হাইড্রেশন ও মেকাপ বেস হিসেবে ব্যবহার
- রাইস ওয়াটার ঘরোয়া পদ্ধতিতে তৈরি এবং সংরক্ষণ
- লেখকের শেষ কথা
রাইস ওয়াটার ফর স্কিন, এর গোপন ও যাদুকরী গুন
রাইস ওয়াটার ফর স্কিন এ বিষয়ে বলতে গেলে এটি একটি প্রাচীন রূপচর্চার প্রাকৃতিক
উপাদান। রাইস ওয়াটারের ত্বক পরিচর্যা ক্ষেত্রে ব্যবহার একটি প্রাচীন এশীয়
সৌন্দর্য রহস্য যা বর্তমানে বিশ্বব্যাপী জনপ্রিয়তা লাভ করেছে। এই প্রাকৃতিক
উপাদানটি শুধুমাত্র পুষ্টিকর খাবারই নয়, এটি আমাদের ত্বকের জন্য অত্যন্ত
উপকারী।
এই রাইস ওয়াটার ত্বকের জন্য যতটা কার্যকরী ততটা চুলের যত্নের জন্য কার্য করে।
ভাত ধোয়ার পানি বা রাইস ওয়াটার প্রাচীনকাল থেকেই জাপানি এবং কোরিয়ান মহিলারা
তাদের ত্বক পরিচর্যায় ব্যবহার করে চলেছেন। এটি প্রাকৃতিক উপায়ে ত্বকের সতেজ
উজ্জ্বলতা এবং যৌবনজ্জ্বল রাখতে সাহায্য করে। রাইস কোয়াটারে রয়েছে বিভিন্ন
ভিটামিন, খনিজ এবং এনজাইম যা ত্বকের স্বাস্থ্য উন্নয়নের গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা
পালন করে।
আধুনিক বিশ্বে আধুনিক সৌন্দর্যের বিশেষজ্ঞরা গবেষণার মাধ্যমে প্রমাণ করেছেন যে
রাইস ওয়াটার ত্বকের কোলাজেন উৎপাদন বাড়ায়, সূর্যের ক্ষতিকর রোশন থেকে রক্ষা
করে এবং ত্বকের প্রাকৃতিক ময়েশ্চারাইজার হিসেবে কাজ করে। এছাড়াও এটি ত্বকের দাগ
দূর করতে এবং ত্বককে সমান টোন করতে সাহায্য করে।
রাইস ওয়াটার এর মাধ্যমে ত্বকের প্রাকৃতিক উজ্জ্বলতা বৃদ্ধি
রাইস ওয়াটার ত্বকের যত্নে একটি অত্যন্ত কার্যকরী প্রাকৃতিক উপাদান। এর
গুরুত্বপূর্ণ এবং কার্যকরী ১৫ টি বৈশিষ্ট্য নিচে উল্লেখ করা হলোঃ
- রাইস ওয়াটারে প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন বি, ই এবং এন্টিঅক্সিডেন্ট রয়েছে যা ত্বকের কোষ পুনর্গঠনে সাহায্য করে।
- রাইস ওয়াটারে থাকা ফেরলিক এসিড সূর্যের ক্ষতিকর রশ্মি থেকে ত্বককে রক্ষা করে এবং বয়েজনিত দাগ কমাতে সাহায্য করে।
- এর প্রাকৃতিক ময়েশ্চারাইজিং গুণ ত্বককে হাইড্রেটেড রাখে এবং শুষ্কতা দূর করে।
- রাইস ওয়াটারের pH মান ত্বকের প্রাকৃতিক pH এর কাছাকাছি, যা ত্বকের ভারসাম্য বজায় রাখতে সাহায্য করে।
- এতে থাকা ইনোসিটল ত্বকের কোষ বৃদ্ধি ত্বরান্বিত করে।
- নিয়মিত রাইস ওয়াটার ব্যবহারে ত্বকের রং এক সমান হয় এবং দাগ মুক্ত হয়।
- প্রদাহ প্রশমন কারী গুন থাকায় ত্বকের জ্বালাপোড়া কমায়।
- ত্বকের কোলাজেন উৎপাদন বাড়িয়ে ত্বকের স্থিতিস্থাপকতা বৃদ্ধি করে।
- প্রাকৃতিক এক্সফোলিয়েটর হিসেবে কাজ করে মৃত ত্বক অপসারণে সহায়তা করে।
- রোদে পোড়া ত্বকের জন্য প্রাকৃতিক প্রশমনকারী হিসেবে কাজ করে।
- ত্বকের রোমকূপ পরিষ্কার করে ব্রণ প্রতিরোধে সাহায্য করে।
- নিয়মিত ব্যবহারে ত্বকের টোন উন্নত করে এবং চকচকে করে।
- প্রাকৃতিক পুষ্টি উপাদান থাকায় কোন পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া নেই।
- ত্বকের বহিরাবরণ শক্তিশালী করে এবং বাইরের ক্ষতিকর প্রভাব থেকে রক্ষা করে।
- সকল ধরনের ত্বকের জন্য উপযোগী এবং সহজলভ্য একটি প্রাকৃতিক সমাধান।
রাইস ওয়াটারের মাধ্যমে অ্যান্টি-এজিং এর প্রাকৃতিক সমাধান
রাইস ওয়াটার ফর স্কিন এই উক্তিটি প্রাচীনকাল থেকে এশিয়ার বিভিন্ন দেশে
প্রাকৃতিক সৌন্দর্য চর্চার উপাদান হিসেবে ব্যবহৃত হয়ে আসছে। এই প্রাকৃতিক
উপাদানটিতে অ্যান্টি-এজিং এর জন্য একটি চমৎকার সমাধান। আসুন এক নজরে এর
গুরুত্বপূর্ণ দিকগুলোর সম্পর্কে জেনে নেইঃ
- ভিটামিন ই সমৃদ্ধঃ রাইস ওয়াটারে প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন ই থাকে, যা ত্বকের কোষ পুনর্গঠনে সাহায্য করে।
- এন্টিঅক্সিডেন্টঃ এতে প্রাকৃতিক এন্টিঅক্সিডেন্ট রয়েছে যা ফ্রি-র্যাডিকেল থেকে ত্বককে রক্ষা করে।
- মিনারেল সমৃদ্ধঃ ক্যালসিয়াম, পটাশিয়াম ও ম্যাগনেসিয়াম ত্বকের স্বাস্থ্য রক্ষায় সহায়তা করে।
- কোলাজেন উৎপাদনঃ ইনোসিটল নামক উপাদান কোলাজেন উৎপাদনে সাহায্য করে।
- ত্বকের ইলাস্টিসিটিঃ নিয়মিত ব্যবহারে ত্বকের নমনীয়তা বাড়ায়।
- প্রাকৃতিক ময়েশ্চারাইজারঃ ত্বকের স্বাভাবিক আর্দ্রতা বজায় রাখে।
- pH ভারসাম্যঃ ত্বকের প্রাকৃতিক pH লেভেল বজায় রাখতে সাহায্য করে।
- চুলের যত্নঃ চুলের গোড়া মজবুত করে এবং চুলকে চকচকে করে।
- দাগমুক্ত ত্বকঃ বয়সজনিত দাগ কমাতে সহায়তা করে।
- প্রদাহ প্রতিরোধঃ ত্বকের প্রদাহ কমাতে সাহায্য করে।
- কোষ পুনর্নবীকরণঃ ত্বকের মৃত কোষ অপসারণে সহায়তা করে।
- রোদে পোড়া প্রতিরোধঃ সূর্যের ক্ষতিকর রশ্মি থেকে ত্বক রক্ষা করে।
- ব্যাকটেরিয়া প্রতিরোধীঃ প্রাকৃতিক ব্যাকটেরিয়া প্রতিরোধী গুণ রয়েছে।
- ব্যয় সাশ্রয়ীঃ দামি কসমেটিকসের তুলনায় অনেক সাশ্রয়ী।
- পার্শ্বপ্রতিক্রিয়ামুক্তঃ সম্পূর্ণ প্রাকৃতিক হওয়ায় কোন পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া নেই।
ত্বকের পিএইচ ব্যালেন্স রক্ষায় রাইস ওয়াটার এর অবদান
রাইস ওয়াটার ফর স্ক্রিন এই উক্তিটির প্রাকৃতিক উপাদান ত্বকের জন্য একটি চমৎকার
প্রাকৃতিক সমাধান। এটি ত্বকের পিএইচ ভারসাম্য বজায় রাখতে সাহায্য করে নিম্নলিখিত
দশটি উপায়েঃ
১) রাইস ওয়াটারে থাকা ইনোসিটল নামক উপাদান ত্বকের কোষ পুনর্গঠনে সাহায্য করে।
২) এর প্রাকৃতিক পিএইচ মান ত্বকের প্রাকৃতিক পিএইচ মানের কাছাকাছি থাকায়
ভারসাম্য রক্ষা করে।
৩) এতে থাকা অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট ত্বকের ক্ষতি রোধ করে।
৪) ফিরোল যৌগ ত্বককে সূর্যের ক্ষতিকর রশ্মি থেকে রক্ষা করে।
৫) এর অ্যামিনো অ্যাসিড কোলাজেন উৎপাদনে সহায়তা করে।
৬) স্টার্চ ত্বকের ময়শ্চারাইজার হিসেবে কাজ করে।
৭) ভিটামিন বি কমপ্লেক্স ত্বকের স্বাস্থ্য উন্নত করে।
৮) এতে থাকা খনিজ পদার্থ ত্বকের পুষ্টি জোগায়।
৯) প্রাকৃতিক এনজাইম মৃত কোষ অপসারণে সাহায্য করে।
১০) এর অ্যান্টি-ইনফ্লামেটরি বৈশিষ্ট্য ত্বকের জ্বালা-পোড়া কমায়। নিয়মিত
ব্যবহারে রাইস ওয়াটার ত্বককে সুস্থ, উজ্জ্বল ও যৌবনোজ্জ্বল রাখতে সাহায্য করে।
রাইস ওয়াটারের মাধ্যমে ব্রণ ও ফুসকুড়ি নিয়ন্ত্রণে চমৎকার সমাধান
রাইস ওয়াটার ত্বকের ব্রণ বা ফুসকুড়ি নিয়ন্ত্রণ চমৎকার ও কার্যকর একটি
প্রাকৃতিক উপাদান। ব্রণ নিয়ন্ত্রণে রাইস ওয়াটারের গোপন ও জাদুঘরের গুনগুলো
সম্পর্কে জেনে রাখুন। এটি কিভাবে ব্রণ নিয়ন্ত্রণে সাহায্য করে তা নিচে উল্লেখ
করা হলোঃ
১. রাইস ওয়াটারে রয়েছে প্রচুর অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট যা ত্বকের ক্ষতিকর টক্সিন দূর
করতে সাহায্য করে।
২. এতে থাকা ভিটামিন বি ও ই ত্বকের কোষ পুনর্গঠনে সহায়তা করে।
৩. এর প্রাকৃতিক অ্যাস্ট্রিনজেন্ট গুণ ত্বকের রোমছিদ্র সংকুচিত করে ব্রণ কমাতে
সাহায্য করে।
৪. এর pH মান ত্বকের প্রাকৃতিক pH এর কাছাকাছি থাকায় ত্বক শুষ্ক হয় না।
৫. নিয়মিত ব্যবহারে ত্বকের অতিরিক্ত তেল নিয়ন্ত্রণে রাখে।
৬. প্রদাহ কমিয়ে ফুসকুড়ি সারাতে সাহায্য করে।
৭. এতে থাকা ইনোসিটল ত্বকের সেল রিজেনারেশনে সহায়তা করে।
৮. খরচ কম হওয়ায় সহজেই ব্যবহার করা যায়।
৯. কোন পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া নেই বললেই চলে।
১০. প্রতিদিন দুইবার ব্যবহার করলে দ্রুত ফল পাওয়া যায়।
রাইস ওয়াটারের মাধ্যমে সানবার্ন প্রতিরোধে প্রাকৃতিক শীল্ড
রাইস ওয়াটারে রয়েছে বিভিন্ন ধরনের গোপন ও জাদুঘরের গুণ যেটি আমাদের ত্বকের জন্য
অনেক উপকারী। রাইস ওয়াটার ে থাকা অ্যামিনো এসিড ত্বককে সূর্যের ক্ষতিকর রশ্মি
থেকে রক্ষা করে। এতে থাকা ভিটামিন ই ত্বকের কোষগুলোকে পুনর্নির্মাণে সাহায্য করে।
এর ফলে ত্বকের মৃত কোষ গুলো পরিষ্কার হয়ে নতুন কোষগুলো জীবিত হওয়ার সুযোগ পায়
এবং ত্বকের উজ্জ্বলতা বৃদ্ধি পায়।
এই রাইস ওয়াটার প্রাকৃতিক ময়েশ্চারাইজার হিসেবে কাজ করে। ত্বকের পি এইচ
ভারসাম্য রক্ষায় কাজ করে। এর ফলে ত্বকে পর্যাপ্ত পরিমাণে কোলাজেন উৎপাদনে
সহায়তা হয়। রাইস ওয়াটার এ বিদ্যমান বিভিন্ন খনিজ ত্বকের এলাস্টিসিটি বাড়াই।
যার ফলে ত্বক বিভিন্ন ক্ষতি থেকে মুক্তি পেতে সক্ষম হয়।
সূর্যের তাপ থেকে ত্বকে ঠান্ডা রাখে এবং প্রদাহ কমাতে সাহায্য করে। রাইস
ওয়াটারের বিভিন্ন গুনাগুন ত্বকের রং এক সমান রাখতে সাহায্য করে। এটি একটি
প্রাকৃতিক উপাদান যার ফলে এর কোন পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া নেই। নিয়মিত ব্যবহারে সকল
ধরনের ত্বকে বিভিন্ন ক্ষতি থেকে মুক্তি পাবেন।
রাইস ওয়াটার চুলের স্বাস্থ্য ও সৌন্দর্য বৃদ্ধিতে অসাধারণ সমাধান
রাইস ওয়াটার এটা যে শুধুমাত্র ত্বকের জন্য কার্যকরী উপাদান ঠিক তেমনটা নয় রাইস
ওয়াটার চুলের যত্নের একটি প্রাকৃতিক ও কার্যকরী সমাধান হিসেবে কাজ করে। এখানে
চুলের জন্য রাইস ওয়াটারের ১০ টি গুরুত্বপূর্ণ উপকারিতা তুলে ধরা হলোঃ
১. রাইস ওয়াটারে থাকা ইনোসিটল নামক উপাদান চুলের গোড়া থেকে আগা পর্যন্ত পুষ্টি
সরবরাহ করে, যা চুলকে শক্তিশালী করে।
২. এতে বিদ্যমান অ্যামিনো অ্যাসিড চুলের কিউটিকল মজবুত করে, ফলে চুল ঝরা কমে
যায়।
৩. প্রাকৃতিক অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট থাকায় চুলের বৃদ্ধি ত্বরান্বিত করে এবং
ক্ষতিগ্রস্ত চুল মেরামত করে।
৪. ভিটামিন বি, ই এবং কে সমৃদ্ধ হওয়ায় চুলের স্বাস্থ্য উন্নয়নে সহায়তা করে।
৫. এর প্রাকৃতিক প্রোটিন চুলকে নরম ও চকচকে করে তোলে।
৬. স্ক্যাল্পের পিএইচ লেভেল নিয়ন্ত্রণে রাখে, যা চুলের স্বাভাবিক বৃদ্ধিতে
সহায়তা করে।
৭. চুলের গ্রে হওয়া প্রতিরোধ করে এবং স্বাভাবিক রং ধরে রাখতে সাহায্য করে।
৮. স্ক্যাল্পের ছত্রাক সংক্রমণ প্রতিরোধে কার্যকরী ভূমিকা পালন করে।
৯. চুলকে ট্যাঙ্গল-ফ্রি করে এবং সহজে আঁচড়ানো যায়।
১০. নিয়মিত ব্যবহারে চুলের স্প্লিট এন্ড সমস্যা দূর করে এবং চুলকে স্বাস্থ্যকর
রাখে।
এই উপাদানটি সম্পূর্ণ প্রাকৃতিক সমাধান যা খরচ সাশ্র্রই এবং পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া
মুক্ত যার ফলে সকলের জন্য এটি নিরাপদ ও কার্যকরী।
রাইস ওয়াটার ত্বকের দাগ ও কালো ছোপ দূর করার প্রাকৃতিক উপায়
রাইস ওয়াটার ফর স্ক্রিন যা তবে যত্ন একটি অত্যন্ত কার্যকরী ও সহজলভ্য প্রাকৃতিক
উপাদান। এটি সুলভ এবং নিরাপদ যা আপনার ত্বকের দাগ ও কালো ছোপ দূর করতে সাহায্য
করে। ত্বকের দাগ ও কালো সব দূর করণে ১০ টি কার্যকরী উপায় নীচে তুলে ধরা হলোঃ
১। রাইস ওয়াটার এ রয়েছে ইনোসিটল হেক্সাফসফেট যা ত্বকের মৃত কোষ অপসারণে সাহায্য
করে।
২। এর অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট উপাদান ত্বকের ক্ষতিকর টক্সিন দূর করে ত্বককে উজ্জ্বল
করে।
৩। রাইস ওয়াটারের ভিটামিন-ই ত্বকের কালো দাগ হালকা করতে সাহায্য করে।
৪। নিয়মিত ব্যবহারে সূর্যের অতিবেগুনি রশ্মির ক্ষতিকর প্রভাব থেকে ত্বক রক্ষা
পায়।
৫। এর ফেরুলিক অ্যাসিড ত্বকের রঙ একসমান করে এবং দাগ মুছে ফেলে।
৬। প্রাকৃতিক ময়েশ্চারাইজার হিসেবে কাজ করে ত্বককে কোমল ও স্নিগ্ধ রাখে।
৭। নিয়মিত ব্যবহারে ব্রণের দাগ ক্রমশ হালকা হয়ে যায়।
৮। এর অ্যান্টি-ইনফ্লামেটরি গুণ ত্বকের জ্বালাপোড়া কমায়।
৯। প্রাকৃতিক সান-প্রোটেক্টর হিসেবে কাজ করে।
১০। কোলাজেন উৎপাদন বাড়িয়ে ত্বককে যৌবনোজ্জ্বল রাখে।
রাইস ওয়াটার এর সাহায্যে ত্বকের যত্ন নেয়া অত্যন্ত সহজ এ পানি সংরক্ষণ করে
রুটিন করে স্ক্রিন কেয়ারে ব্যবহার করলে আপনি এর উপকারিতা ভালোভাবে অর্জন করতে
পারবেন।
রাইস ওয়াটারের মাধ্যমে সেনসিটিভ স্কিনের জন্য নিরাপদ সমাধান
রাইস ওয়াটারের অনেক গোপন ও যাদুকরি গুণ রয়েছে যার ফলে এটি সব ধরনের ত্বকে
কার্যকরী। রাইস ওয়াটার তককে স্বাভাবিকভাবে আদ্র রাখে যা শুষ্ক ও সংবেদনশীল
ত্বকের জন্য বিশেষ উপকারে। এর অ্যান্টি-ইনফ্লেমেটরি বৈশিষ্ট্য ত্বকের লালভাব ও
জ্বালাপোড়া কমাতে সাহায্য করে। রাইস ওয়াটারে বিদ্যমান ভিটামিন বি ও ই ত্বকের
স্বাস্থ্য রক্ষায় অনেক বড় ভূমিকা পালন করে।
ত্বকের প্রাকৃতিক পি এইচ মাত্রা বজায় রাখতে সহায়তা করে। যার ফলে ত্বকের
প্রাকৃতিক এন্টি ব্যাকটেরিয়াল গুন ত্বকের সংক্রমণ প্রতিরোধে সহায়তা করে। তাকে
উৎপাদনে সহায়তা করে যা ত্বকের সৌন্দর্য স্থিতি বজায় রাখে। সূর্যের ক্ষতিক থেকে
সুরক্ষা প্রদান করে যার ফলে আমাদের ত্বকের কোর্সগুলো সুস্থ এবং সবল থাকে।
ত্বকের দাগ হালকা করতে এবং নতুন দাগ পড়া রোধ করতে এর জাদুকরী গুন অনেক সহায়তা
করে। ত্বকের ছিদ্র গুলি সংকুচিত করে সাহায্য করে। প্রাকৃতিক সমাধান ঘরে তৈরি করা
সম্ভব যার ফলে এটি ব্যবহার করতে বা সংগ্রহ করতে বেশি কষ্ট হয় না।
রাইস ওয়াটারের মাধ্যমে ত্বকের হাইড্রেশন ও মেকাপ বেস হিসেবে ব্যবহার
রাইস ওয়াটার শুধুমাত্র ত্বকের যত্নের নয় এটি ত্বকের হাইড্রেশন ও মেকআপ বেস
হিসেবে ব্যবহৃত হয়। এ বিষয়ে গুরুত্বপূর্ণ ১০ টি তথ্যঃ
১) রাইস ওয়াটারে প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন বি, ই এবং এন্টিঅক্সিডেন্ট রয়েছে যা
ত্বককে স্বাস্থ্যকর
রাখে।
২) এটি ত্বকের প্রাকৃতিক পিএইচ (pH) ব্যালেন্স বজায় রাখতে সাহায্য করে, যা
স্বাস্থ্যকর ত্বকের জন্য
অত্যন্ত জরুরি।
৩) মেকাপের আগে রাইস ওয়াটার ব্যবহার করলে এটি একটি দারুণ প্রাইমার হিসেবে কাজ
করে।
৪) নিয়মিত ব্যবহারে ত্বকের রঙ উজ্জ্বল হয় এবং দাগ মুক্ত থাকে।
৫) এর মধ্যে থাকা ফেরুলিক এসিড সূর্যের ক্ষতিকর রশ্মি থেকে ত্বককে রক্ষা করে।
৬) রাইস ওয়াটার ত্বকের কোলাজেন উৎপাদন বাড়াতে সাহায্য করে।
৭) এটি একটি প্রাকৃতিক ময়েশ্চারাইজার হিসেবে কাজ করে।
৮) ত্বকের ইনফ্লামেশন কমাতে এবং একনে নিয়ন্ত্রণে সাহায্য করে।
৯) নিয়মিত ব্যবহারে ত্বকের বয়সের ছাপ কমে যায়।
১০) এটি সহজেই বাড়িতে তৈরি করা যায় এবং অর্থনৈতিকভাবে সাশ্রয়ী।
এই প্রাকৃতিক উপাদানটি নিয়মিত ব্যবহার করে আপনি সহজেই স্বাস্থ্যকর উজ্জ্বল ও
যত্নশীল ত্বক পেতে পারেন।
রাইস ওয়াটার ঘরোয়া পদ্ধতিতে তৈরি এবং সংরক্ষণ
রাইস ওয়াটার বাঙালি রন্ধনশালার একটি মূল্যবান সম্পদ। এই পুষ্টিকর পানীয়টি তৈরি
ও সংরক্ষণের সহজ পদ্ধতি সকলের জেনে রাখা উচিত। প্রথমে ভালো মানের চাল ঠান্ডা পানি
দিয়ে ধুয়ে নিন। এরপর একটি পুরস্কার পাত্রে চালের সাথে দ্বিগুণ পরিমাণ পানি
দিয়ে ৩০ মিনিট ভিজিয়ে রাখুন। এই সময়ে চালের সমস্ত পুষ্টিগুণ পানিতে মিশে
যাবে।
এবার একটি পরিষ্কার সুতি কাপড় দিয়ে পানিটি ছেঁকে নিন। রাইস ওয়াটার সংরক্ষণের
জন্য একটি কাঁচের বোতল ব্যবহার করুন। আগে থেকে জীবাণুমুক্ত করে নিন। থেকে নেয়া
পানিতে একটু লেবুর রস ওটি লবন মিশিয়ে বোতলে ভরে ফ্রিজে রাখুন। এভাবে ৪৮ ঘন্টা
পর্যন্ত। তাজা তৈরি করে খাওয়া ভালো। এই পানীয়টি শরীরের জন্য বিশেষ
উপকারী।
এতে প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন বি, পটাশিয়াম, ম্যাগনেসিয়াম ও এন্টি অক্সিডেন্ট
রয়েছে। নিয়মিত সেবনে ত্বকের উজ্জ্বলতা বাড়ে এটির ব্যবহারে চুলের স্বাস্থ্য
ভালো থাকে এবং হজম ক্ষমতা বৃদ্ধি পায়। গ্রীষ্মকালে দৈহিক দুর্বলতা কমাতে এটি
বিশেষ কার্যকরী একটি উপাদান। বাচ্চাদের খুব ভালো এবং কার্যকর একটি উপাদান।
অতিরিক্ত গরমে শরীর ঠান্ডা রাখতে এবং কাজ করে।
তবে একটি লক্ষণীয় বিষয় যেটা সেটা হল যে অতিরিক্ত পরিমাণে রাইস ওয়াটার সেবন করা
থেকে বিরত থাকতে হবে কারণ এতে শরীরের জলীয় ভারসাম্য নষ্ট হতে পারে।
লেখকের শেষ কথা
রাইস ওয়াটার প্রাকৃতিক সৌন্দর্য চর্চার একটি উত্তম বিকল্প হিসেবে প্রমাণিত
হয়েছে, যা নিরাপদ, কার্যকর এবং পরিবেশবান্ধব। এর প্রাকৃতিক উপাদান গুলি ত্বকের
জন্য বিশেষ উপকারী। ইনোসিটল, ভিটামিন বি, ই এবং বিভিন্ন রকম খনিজ পদার্থ গুলি
ত্বকের এবং এর স্বাস্থ্য উন্নয়নে ভূমিকা রাখে।
প্রিয়দর্শক আজকের এই আর্টিকেলে রাইস ওয়াটারের গুনাগুন ব্যবহার এবং তৈরি
সম্পর্কে আপনাকে স্বচ্ছ ধারণা দিতে পেরেছি। আশা করছি আজকের আর্টিকেলের দ্বারা
আপনারা উপকৃত হবেন। প্রতিনিয়ত এরকম স্বাস্থ্যকর এবং প্রাকৃতিক রেমিটি গুলো
সম্পর্কে জানতে আমাদের ওয়েবসাইট ভিজিট করুন এবং আপনার পরিচিতদের মাঝে শেয়ার
করুন আপনাদের সুস্বাস্থ্য কামনা করে আজকের আলোচনা এখানে শেষ করছি।
অর্ডিনারি আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।
comment url