সবচেয়ে বেশি আয়রন সমৃদ্ধ খাবার

কাঁচা আমলকি খাওয়ার নিয়ম ও উপকারিতাসবচেয়ে বেশি আয়রন সমৃদ্ধ খাবার সম্পর্কে জানতে চাচ্ছেন, প্রিয় দর্শকবৃন্দ তাহলে আজকের এই আর্টিকেলটা আপনার জন্য। আজকের এই আলোচনায় আয়রন সমৃদ্ধ কি কি খাবার রয়েছে এবংপর্যাপ্ত আয়রন শোষণে যে খাবারগুলো সাহায্য করে এ বিষয়গুলো আপনাদের একটি স্পষ্ট ধারণা দেয়ার চেষ্টা করব।

সবচেয়ে বেশি আয়রন সমৃদ্ধ খাবার
সবচেয়ে বেশি আয়রন সমৃদ্ধ খাবার গুলো সম্পর্কে বিস্তারিত জ্ঞান অর্জনের জন্য আশা করছি আপনি এই সম্পূর্ণ আর্টিকেল এর আলোচনা জুড়ে শেষ পর্যন্ত আমাদের সঙ্গে থাকবেন।

পেজ সূচিপত্রঃসবচেয়ে বেশি আয়রন সমৃদ্ধ খাবার

সবচেয়ে বেশি আয়রন সমৃদ্ধ খাবার

মানব শরীরের বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ উপাদানের মধ্যে আয়রন মানব শরীরের জন্য একটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ খনিজ পদার্থ ।মানব দেহে রক্ত তৈরি থেকে শুরু করে অক্সিজেন পরিবহনে আয়রন সহায়তা করে থাকে। আমাদের শরীরের জন্য গ্রহণ কৃত খাদ্য তালিকার মধ্যে বিভিন্ন খাবারে প্রচুর পরিমাণে আয়রন রয়েছে। 

খাবারের তালিকার মধ্যে প্রাণিজ উৎস থেকে যে আয়রন পাওয়া যায় তা সহজেই শোষণযোগ্য। এছাড়াও গরুর লিভার, লাল মাংস, মুরগির কলিজা এই সবকিছুতে প্রচুর পরিমাণে আয়রন মজুদ রয়েছে। মাছের মধ্যে সামুদ্রিক মাছ যেমনঃ টুনা, সার্ডিন এবং সালমন আয়রনের ভালো উৎস। ডিমের কুসুমও আয়রন সমৃদ্ধ।উদ্ভিজ্জ জাতীয় খাবার অর্থাৎ শাকসবজি এবং বিভিন্ন ধরনের ডাল এগুলোতে প্রচুর পরিমাণে আয়রন দ্বারা সমৃদ্ধ। 
তাছাড়া আমরা প্রায়শই ড্রাই ফুড এ জাতীয় খাবারের নাম শুনে থাকি এগুলোর মধ্যে রয়েছে বাদাম, কাঠবাদাম, কাজুবাদাম, পেস্তা বাদাম, কিসমিস, খেজুর, মধু ইত্যাদি সকল খাবারগুলোতে প্রচুর পরিমাণে আয়রন পাওয়া যায়। এছাড়াও সয়াবিন ,কুইনোয়া এবং ওটস এগুলো ভালো আয়রনের উৎস। মানব খাদ্য তালিকায় একটি লোভনীয় খাবার যাতে প্রচুর পরিমাণে আয়রনের মজুদ রয়েছে এটি হলো ডার্ক চকলেট। ডার্ক চকলেট নিয়মিত গ্রহণে শরীরের আয়রনের চাহিদা তো পূরণ হয়ই এর পাশাপাশি রক্তস্বল্পতা প্রতিরোধে সাহায্য করে।

আয়রনের গুরুত্ব: শরীরে আয়রনের ভূমিকা এবং প্রয়োজনীয়তা

মানব দেহের জন্য আয়রন একটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ খনিজ পদার্থ। আয়রন এটি মানব দেহের জন্য হিমোগ্লোবিন তৈরির জন্য অপরিহার্য যা রক্তে অক্সিজেন বহন করে। অনেক সময় দেখা গেছে আয়রনের অভাবে রক্তস্বল্পতা দেখা দিতে পারে এর ফলে শরীরের ক্লান্তি দুর্বলতা এবং শ্বাসকষ্ট এজাতীয় অসুখে আক্রান্ত হতে পারে। 

এগুলো থেকে মানব শরীর সুস্থ রাখতে আয়রনের প্রয়োজনীয়তা অপরিসীম। গর্ভবতী মহিলাদের জন্য আয়রন বিশেষভাবে গুরুত্বপূর্ণ। এর কারণ এটি ভ্রূণের সুস্থ বিকাশে সহায়তা করেএর ফলে বাচ্চার সুস্থ ও স্বাভাবিক বিকাশের মাধ্যম দিয়ে জন্মগ্রহণ করে। যে খাবারগুলো আয়রনের উৎস ওই খাবারগুলো গ্রহনে অনেক সময় আমাদের শরীরে সহজে শোষিত হয় না। 

এর ফলে ভিটামিন সি সমৃদ্ধ খাবার গুলো পর্যাপ্ত পরিমাণে খেলে আয়রন শোষণ বৃদ্ধি পায়। অনেক সময় আয়রনসমৃদ্ধ খাবার গ্রহণের পরেও আমাদের আয়রনের চাহিদাটা পূরণ হয় না এক্ষেত্রে সুষম খাদ্যাভাস এবং চিকিৎসকের পরামর্শ অনুযায়ী প্রয়োজনের সাপ্লিমেন্ট গ্রহণের মাধ্যমে শরীরের আয়রনের মাত্রা ঠিক রাখতে হবে।

মাংস ও মাছ: প্রাণিজ উৎসের আয়রন সমৃদ্ধ খাবার

আমাদের খাদ্য তালিকায় গুরুত্বপূর্ণ উপাদান গুলোর মধ্যে মাছ-মাংস অন্যতম। মানবদেহের প্রয়োজনীয় আয়রনের উৎস গুলোর মধ্যে মাছ-মাংস একটি প্রধান উৎস। আয়রন সমৃদ্ধ খাবারগুলোর মধ্যে লাল মাংস যেমনঃ গরু ও খাসির মাংস আয়রনের উৎস। এছাড়াও হাঁস,মুরগি বিভিন্ন পাখি জাতীয় মাংস এবং টার্কি মুরগির মাংস পর্যাপ্ত পরিমাণে আয়রন রয়েছে ।

মাছের মধ্যে টুনা, সার্ডিন, স্যামন এবং ম্যাকেরেল আয়রনের ভালো উৎস।এ সকল খাবারগুলো থেকে প্রাপ্ত হিম আয়রন সহজে মানব শরীরে শোষণযোগ্য। যা রক্তের হিমোগ্লোবিন তৈরিতে অনেক গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। সামগ্রিকভাবে, মাছ ও মাংস আমাদের দৈনন্দিন খাদ্য তালিকায় অনেকাংশেই আয়রনের চাহিদা পূরণে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। কিন্তু, এর পাশাপাশি অন্যান্য পুষ্টিকর খাবারও আমাদের গ্রহণ করা উচিত।
আয়রনের গুরুত্ব এবং এর উপকারিতা


শাকসবজি: উদ্ভিদজাত আয়রনের উৎস

শাকসবজি উদ্ভিদজাত আয়রনের একটি গুরুত্বপূর্ণ উৎস।শাকসবজি থেকে পাওয়া আয়রন গুলো অ-হিমটাইপের হয়ে থাকে যা মানব শরীরে সহজে শোষিত হয় না। তবে বিভিন্ন রকম সবুজ শাকসবজিতে প্রচুর পরিমাণে আয়রনের মজুদ রয়েছে এর মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলো পালংশাক, ব্রোকলি, মটরশুঁটি ও কচুশাক।

এছাড়াও বিভিন্ন রকমের ডাল, বিভিন্ন রকমের বাদাম এবং বীজ জাতীয় খাবারে প্রচুর পরিমাণে আয়রন রয়েছে। শাকসবজি থেকে মিলিত আয়রন মানবদেহে অন্য খাবারে তুলনায় কম মাত্রায় শোষিত হয় এজন্য শাকসবজি খাবার পাশাপাশি আমাদের ভিটামিন সি সমৃদ্ধ খাবার গ্রহণ করতে হবে যে খাবারগুলো আয়রন শোষণে সাহায্য করবে। 

অন্যদিকে যা এবং কফি জাতীয় তরল সেবনে আয়রন কম পরিমাণে শোষিত হয় এই খাবারগুলো মানব শরীরে আয়রন শোষণের ক্ষমতা কমিয়ে থাকে এর জন্য যা বা কফি কম মাত্রায় সেবন করতে হবে। প্রতিদিন খাবারের তালিকায় শাক সবজি রক্তস্বল্পতা জনিত সমস্যা প্রতিরোধে সাহায্য করে ।
তবে, মাছ কিংবা মাংস থেকে প্রাপ্ত আয়রনের তুলনায় উদ্ভিদ জাত আয়রন কম শোষিত হয় এজন্য শাকসবজি একটু বেশি পরিমাণে গ্রহণ করতে হবে যার ফলে এর মাধ্যমে আমাদের শরীরে কাঙ্খিত আয়রনের অভাব পূরণ হবে।

ডাল ও বীজ: প্রোটিন ও আয়রনের সমন্বয়

মানব খাদ্য তালিকায় ডাল ও বীজ একটি অপরিহার্য উপাদান। এই খাবারগুলো শুধু সাধেই নয় আমাদের শরীরের জন্য বিভিন্ন পুষ্টিগুণে সমৃদ্ধ। ডাল এবং বীজ জাতীয় খাবারের প্রচুর পরিমাণে প্রোটিন ও আইরন পাওয়া যায় যেগুলো আমাদের শরীরের জন্য অত্যন্ত প্রয়োজনীয়। ডাল ও বীজে প্রাপ্ত প্রোটিন ও আয়রন আমাদের শরীরের বেশি গঠন এবং আমাদের শরীর মেরামতের জন্য অপরিহার্য উপাদান। 

এ জাতীয় খাবারে মজুদরত আয়রন যা আমাদের শরীরের রক্ত তৈরিতে সাহায্য করে এবং এর পাশাপাশি অক্সিজেন পরিবহনেও সাহায্য করে থাকে।মসুর ডাল, ছোলা, মুগ ডাল, কালো ডাল, সয়াবিন - এগুলি সবই প্রোটিন ও আয়রনের উত্তম উৎস।এজাতীয় খাবার সেবনে শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি পায়। 

বিশেষ করে সাকাহারি যারা রয়েছে তাদের জন্য এই জাতীয় খাবার একটি অনেক বড় প্রোটিন এবং আয়রনের উৎস। তাই আমাদের সুস্থ জীবন যাপনের জন্য দৈনন্দিন খাদ্য তালিকায় ডাল ও বীজের উপস্থিতি নিশ্চিত করা উচিত।

ডিম: সহজলভ্য ও সাশ্রয়ী আয়রনের উৎস

অল্প খরচে ডিম একটি সহজলভ্য ও সাশ্রয়ী আয়রনের উৎস। এটি আমাদের দৈনন্দিন খাদ্য তালিকায় একটি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে থাকে। ডিমে প্রোটিন, ভিটামিন ও খনিজের একটি সমৃদ্ধ খাজানা। ডিমের কুসুমে প্রচুর পরিমাণে আয়রন রয়েছে যা আমাদের শরীরে সহজে শোষিত হয় এর ফলে আমাদের শরীর রক্তস্বল্পতা সহ বিভিন্ন রকমের রোগ প্রতিরোধে স্বাবলম্বী হয়ে ওঠে। 

প্রতিদিন ডিম সেবন করলে আমাদের শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ে এবং মস্তিষ্কের কর্ম ক্ষমতা বৃদ্ধি করে। এর মধ্যে থাকা লুটিন ও জিয়াজ্যান্থিন চোখের স্বাস্থ্য রক্ষায় সহায়ক। ডিম সহজলভ্য এবংসহজে রান্না করা যায় বলে ডিম দ্রুত ও পুষ্টিকর খাবার হিসেবে জনপ্রিয়। একটি বিভিন্ন ধরনের রেসিপিতে ব্যবহার করা যায় যার ফলে খাদ্য তালিকায় অনেক বৈচিত্র আনে।

শুকনো ফল: মিষ্টি ও পুষ্টিকর আয়রনের খনি

দৈনন্দিন খাদ্য তালিকায় শুকনো ফল আমাদের জন্য একটি অপরিহার্য অংশ। এগুলো শুধু সুস্বাদু নয় পুষ্টিগুণেও সমৃদ্ধ হয়ে থাকে। বিশেষ করে, শুকনো ফল এটি আমাদের জন্য প্রাকৃতিকভাবে আয়রনের অন্যতম এবং উত্তম উৎস। কিশমিশ, খেজুর, আপেল, ও ড্রাই প্লাম এই সকল শুকনো ফলসহ আরো বিভিন্ন ধরনের ফল রয়েছে যেগুলো যেমন মিষ্টি, তেমনি আয়রন সমৃদ্ধ। 

প্রতিদিন শুকনো ফল সেবনে এতে থাকা আইরন রক্তের স্বল্পতা প্রতিরোধ করে এবং শরীরের সামগ্রিক শক্তি বৃদ্ধি করে থাকে। শুকনো ফলে রয়েছে ফাইবার যা আমাদের হজম প্রক্রিয়া উন্নত করে এবং আমাদের কোষ্ঠকাঠিন্য রোগ থেকে দূরে রাখে।এছাড়াও এগুলিতে প্রচুর পরিমাণে অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট থাকে, যা ফ্রি-র্যাডিকেল থেকে শরীরকে রক্ষা করে।

নিয়মিত শুকনো ফল খেলে হৃদরোগ ও ক্যান্সার এর মত রোগের ঝুঁকিপূর্ণতা থেকে মুক্তি লাভ করা যায়। শুকনো ফল এই খাবারগুলি সহজে বহনযোগ্য এবং দীর্ঘ দিন ধরে ভালো থাকার কারণে এটি একটি সুবিধা জনক স্ন্যাক খাদ্য তালিকায় যোগ করা যেতে পারে।তবে এ ধরনের শুকনো ফলে উচ্চ ক্যালরি সমৃদ্ধ হওয়ায় প্রতিদিন পরিমিত পরিমাণে খাওয়া উচিত।

আয়রন-ফোর্টিফাইড খাদ্য: প্রক্রিয়াজাত খাবারে আয়রন যোগ

আয়রন-ফোর্টিফাইডএটি একটি প্রক্রিয়াজাত খাবারে আয়রন যোগের প্রক্রিয়া। এটি একটি গুরুত্বপূর্ণ পুষ্টি সাধনের মাধ্যম। এই প্রক্রিয়ার মূল উদ্দেশ্য জনসাধারণ এবং সব শ্রেণীর মানুষের আয়রনের অভাব দূর করা। যার ফলে যে কোন শ্রেণীর মানুষ রক্তস্বল্পতা এবং অন্যান্য স্বাস্থ্য সমস্যা থেকে নিস্তার পাবে। 

এ প্রক্রিয়ার ক্ষেত্রে সাধারণত আটা, চাল, পাস্তা, বা অন্যান্য স্টেপল খাদ্যে আয়রন যোগ করা হয়। এই প্রক্রিয়াটি খুব সাবধানে করা হয় কারণ এর ফলে খাবারের স্বাদ ও গুণগত মানের কোন সমস্যা না হয়। আয়রন-ফোর্টিফাইডএর দ্বারা প্রক্রিয়াজাতকৃত খাবার বিশেষ করে গর্ভবতী মহিলা বাচ্চা এবং কিশোর কিশোরীদের জন্য অনেক উপকারী।

আয়রন-ফোর্টিফাইড একটি অনেক গুরুত্বপূর্ণ এবং কার্যকর মাধ্যম যার ফলে কম খরচে বড় জনগোষ্ঠীর পুষ্টির মান উন্নত করা সম্ভব। তবে এই প্রক্রিয়ার সফল বাস্তবায়নের জন্য সরকারের নীতি, শিল্প সহযোগিতা সহ জনসচেতনতা প্রয়োজন।

আয়রন শোষণ বাড়ানোর উপায়: ভিটামিন সি-যুক্ত খাবারের গুরুত্ব

সুস্বাস্থ্য বিকাশের জন্য এবং আমাদের শরীরের জন্য দারুন একটি গুরুত্বপূর্ণ খনিস পদার্থ। মানব দেহের ওয়েল অর্থাৎ রক্ত, আইরন রক্তের হিমোগ্লোবিন তৈরিতে সাহায্য করে। কিন্তু আমাদের জন্য শুধু আয়রন সমৃদ্ধ খাবার খাওয়াই যথেষ্ট নয়। আয়রন সমৃদ্ধ খাবার খাবার পাশাপাশি আমাদেরকে এই দিকে লক্ষ্য রাখতে হবে যে আমাদের শরীর সঠিকভাবে যেন আয়রন শোষণ করতে পারে। 

সঠিকভাবে আয়রন শোষণের জন্য ভিটামিন সি একটি অপরিহার্য উপাদান। ভিটামিন সি এটি আয়রনের শোষণ ক্ষমতা বৃদ্ধি করে বিশেষ করে শাকসবজি জাতীয় খাবার যেগুলো তে নন- হিম আয়রন রয়েছে সেগুলো সেবনের পাশাপাশি ভিটামিন সি সমৃদ্ধ খাবারও খেতে হবে। লেবু, কমলা, আমলকি, পেঁপে, কিউই ফল, টমেটো, ব্রোকলি, ও শিম এর মতো সবজি ভিটামিন সি-এর উত্তম উৎস। 

উদাহরণস্বরূপ, ডাল বা পালং শাকের সাথে লেবুর রস মিশিয়ে খেলে আয়রন শোষণ বৃদ্ধি পায়। একইভাবে, মাংসের সাথে টমেটো সস বা সালাদ খাওয়া যেতে পারে। প্রতিদিন খাবারের তালিকায় এ ধরনের সমন্বয় করে খাবার গ্রহণ করলে আমাদের শরীর পর্যাপ্ত পরিমাণে আয়রন শোষণ করতে পারবে যার ফলে রক্তের স্বল্পতা প্রতিরোধসহ বিভিন্ন রোগ থেকে মুক্তি লাভ হবে এবং সামগ্রিক স্বাস্থ্যের উন্নতি ঘটবে ।

আয়রন শোষণে বাধা: এড়ানোর যোগ্য খাবার ও পানীয়

আমাদের শরীর আয়রন শোষণে বাধাগ্রস্ত হয় এ জাতীয় খাবার ও পানীয় এড়িয়ে চলা আমাদের শরীরের জন্য উত্তম। কফি, চা এবং রেড ওয়াইন এগুলো আমাদের শরীরে আয়রন শোষণে বাধা দেয় এ কারণে এ জাতীয় খাবারগুলো পরিমিত আকারে গ্রহণ করাই আমাদের শরীরের জন্য ভালো। এ জাতীয় খাবার খাবারের সাথে বা খাবারের কিছুক্ষণ আগে বা পরে গ্রহণ করা উচিত নয়। 

ক্যালসিয়াম সমৃদ্ধ খাবার এর মধ্যে দুধ দুই এবং বিভিন্ন পনির ইত্যাদি আয়রন শোষণে বাধা সৃষ্টি করে এই জন্য আমাদের চেষ্টা করতে হবে এগুলো আমাদের মূল খাবারের সাথে সেবন না করা। অনেক সময় আমরা রুচির জন্য এ সকল খাবার খেয়ে থাকে তবে সকল খাবার গ্রহণ করলে চেষ্টা করতে হবে অল্প পরিমাণে গ্রহণ করা। 
আমাদের মূল খাদ্য তালিকায় সবকিছুর পরিবর্তে ভিটামিন সি সমৃদ্ধ খাবার যেমনঃ লেবু, কমলা, পেপে, কিউই ফলইত্যাদি এ জাতীয় খাবার সেবন করতে হবে যাতে আমাদের শরীর পর্যাপ্ত পরিমাণে আয়রন শোষণ করতে পারে। সঠিক নিয়মে এবং পরিমাণ অনুযায়ী খাদ্যাভাস অনুসরণ করলে আমাদের শরীর পর্যাপ্ত পরিমাণ আয়রন শোষণ করে সমৃদ্ধ এবং সুস্বাস্থ্যের অধিকারী হতে পারবে।

বয়স ও লিঙ্গ অনুযায়ী আয়রনের চাহিদা

আয়রন আমাদের মানব শরীরের জন্য একটি অত্যাবশ্যকীয় খনিজ পদার্থ। বয়স ভেদে এবং লিঙ্গ ভেদে আয়রনের চাহিদা ভিন্ন হতে পারে। বিভিন্ন হেলথ অর্গানাইজেশন কর্তৃক বিভিন্ন পরীক্ষা-নিরীক্ষায় দেখা গেছে যে শিশুদের জন্য আয়রনের পরিমাণের মাত্রা একরকম, কিশোর কিশোরীদের জন্য একরকম, বয়স্কদের জন্য একরকম এছাড়াও গর্ভবতী মহিলা এবং স্তন্যদানকারী মায়েদের জন্যএকরকম।
বয়স ও লিঙ্গ অনুযায়ী আয়রনের চাহিদা


  • শিশুদের ক্ষেত্রে ৭-১২ মাস বয়সী শিশুদের দৈনিক ১১ মিলিগ্রাম আয়রন প্রয়োজন।
  • ১-৩ বছর বয়সী শিশুদের জন্য এই পরিমাণ ৭ মিলিগ্রাম।
  • ৪-৮ বছর বয়সী শিশুদের জন্য ১০ মিলিগ্রাম সুপারিশ করা হয়।
  • কিশোর-কিশোরীদের ক্ষেত্রে, ৯-১৩ বছর বয়সী ছেলেদের ৮ মিলিগ্রাম এবং মেয়েদের ৮ মিলিগ্রাম প্রয়োজন।
  • ১৪-১৮ বছর বয়সী কিশোরদের জন্য ১১ মিলিগ্রাম এবং কিশোরীদের জন্য ১৫ মিলিগ্রাম সুপারিশ করা হয়।
  • প্রাপ্তবয়স্ক পুরুষদের জন্য দৈনিক ৮ মিলিগ্রাম আয়রন প্রয়োজন।
  • প্রাপ্তবয়স্ক মহিলাদের জন্য এই পরিমাণ ১৮ মিলিগ্রাম।
  • গর্ভবতী মহিলাদের জন্য ২৭ মিলিগ্রাম এবং স্তন্যদানকারী মায়েদের জন্য ৯ মিলিগ্রাম আয়রন প্রয়োজন।
  • বয়স্ক ব্যক্তিদের জন্য ৮ মিলিগ্রাম সুপারিশ করা হয়।
ওপরের উল্লেখিত আয়রনের পরিমাণ গুলি সাধারণত সাধারণ স্বাস্থ্যবান ব্যক্তিদের জন্য প্রযোজ্য। এ ছাড়া বিশেষ চিকিৎসারত অবস্থায় এর পরিমাণ ভিন্ন হতে পারে।

লেখকের মন্তব্য

সবচেয়ে বেশি আয়রন সমৃদ্ধ খাবার যেগুলো রয়েছে সেগুলোর বিষয়ে এই আর্টিকেল এর মাধ্যমে আপনাদের একটি স্বচ্ছ ধারণা দিতে চেষ্টা করেছে। আয়রন আমাদের শরীরের জন্য অতি প্রয়োজনীয় একটি উপাদান। রক্ত হিমোগ্লোবিন তৈরির পাশাপাশি অক্সিজেনের প্রবাহ থেকে শুরু করে বিভিন্ন রকম রোগ থেকে মুক্তি লাভের আইরন আমাদের শরীরকে অনেক সাহায্য করে। আমাদের প্রত্যেকের লিঙ্গ এবং বয়স ভেদে যে পরিমাণ আয়রন প্রয়োজন সে সম্পর্কে সঠিক ভাবে জানতে হবে। 

আশা করছি এই আর্টিকেলের দ্বারা আপনি উপকৃত হবেন এবং এর পাশাপাশি আপনার পরিচিতদের মাঝে শেয়ার করবেন। এ ধরনের স্বাস্থ্য ভিত্তিক তথ্যের জন্য নিয়মিত আমাদের ওয়েবসাইট ভিজিট করতে পারেন। আমাদের সাথে শেষ পর্যন্ত থাকার জন্য আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ ।আপনার সুস্বাস্থ্য কামনা করে আজকের এই আলোচনা এখানেই শেষ করছি

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

অর্ডিনারি আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url