পাহাড়-ঝর্না-নদীর অপরূপ সমন্বয় বান্দরবান

কক্সবাজার বাংলাদেশের পর্যটন শিল্পের প্রাণকেন্দ্রপাহাড় ঝর্ণা নদীর অপরূপ সমন্বয় বান্দরবান এমন কেউ নাই যে এই বান্দরবানের সৌন্দর্যে মুখরিত হবে না।আপনাদের জন্য বান্দরবানের সৌন্দর্য ও দর্শনীয় স্থানগুলোর আলোচনা নিয়ে হাজির হয়েছে।  বান্দরবানের ভ্রমণের খরচ এ জাতীয় কিছু তথ্য।বিস্তারিত ভাবে জানার জন্য আশা করছি শেষ পর্যন্ত আমাদের সাথে থাকবেন।
পাহাড়-ঝর্না-নদীর অপরূপ সমন্বয় বান্দরবান
চলুন দেরি না করে বান্দরবানের সৌন্দর্য ও মনোরম পরিবেশ এবং পাহাড় ঝর্ণা নদী নিয়ে আলোচনা শুরু করা যাক আশা করছি আপনার ভালো লাগবে।

পোস্ট সূচীপত্রঃপাহাড়-ঝর্না-নদীর অপরূপ সমন্বয় বান্দরবান


বান্দরবান জেলার প্রাকৃতিক সৌন্দর্য এবং দর্শনীয় স্থান

পাহাড়-ঝর্না-নদীর অপরূপ সমন্বয় বান্দরবান।পার্বত্য অঞ্চল গুলোর মধ্যে বান্দরবান তার মনোরম এবং অপরূপ সৌন্দর্য দিয়ে বাংলাদেশের মধ্যে এই জেলাটি মাথা উঁচু করে দাঁড়িয়ে আছে। সৌন্দর্যের দিক দিয়ে বান্দরবান কারো থেকে কোন অংশেই কম নয়। বান্দরবান জেলা বাংলাদেশের দক্ষিণ পূর্ব অঞ্চলজুড়ে এর মনোরম ও প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের পরিবেশ নিয়ে অবস্থিত। 

পাহাড়ি ভূমিরূপ সবুজ আরণ্য শীতল ঝর্ণা উষ্ণ ঝর্ণা এবং আঁকাবাঁকা নদী গুলোর প্রাকৃতিক সৌন্দর্য দিয়ে এই বান্দরবান জেলা বাংলাদেশ সহ বিদেশেও প্রকৃতির সৌন্দর্যের অপরূপ নিদর্শন এবং অপরূপ লীলাভূমি হিসেবে পরিচিত অর্জন করেছে। বান্দরবানের রয়েছে বাংলাদেশের সর্বোচ্চ পর্বত শৃঙ্গ তাজিংডং যার উচ্চতা ১২৮০ মিটার এছাড়াও রয়েছে কেওক্রাডং, চিম্বুক, মৈক্ষ্যং পাহাড় যেগুলো পর্যটকদের আকর্ষণ করে। 

আকর্ষণীয় স্থানগুলোর মধ্যে সুখ্যাতি অর্জন করে আছে নীলগিরি পর্যটন কেন্দ্র যা বান্দরবানের একটি জনপ্রিয় গন্তব্যস্থান। মেঘের সাথে মিশে থাকা পাহাড়ের অপূর্ব সুন্দর এবং মনোুগ্ধকর পরিবেশ আকর্ষণ করবে যে কাউকে। এছাড়াও আকর্ষণীয় স্থানগুলোর মধ্যে যেগুলো জায়গা দখল করে নিয়েছে সেগুলো হল শৈলপ্রপাত মেঘের ঊর্ধ্বে অবস্থিত বোগালেক এবং রাজবৈদ্য লেক যা প্রতিনিয়ত পর্যটকদের আকর্ষণ করে চলেছে।

পাহাড়-ঝর্না-নদীর অপরূপ সমন্বয় বান্দরবান।পাহাড় ছাড়াও বান্দরবান তার নদীর সৌন্দর্যের জন্য বিখ্যাত এর মধ্যে আকর্ষণীয় হল সাঙ্গু নদী।যেকোনো পর্যটকদের ক্ষেত্রে এই নদীর তীরে নৌকা ভ্রমণ একটি স্মরণীয় অভিজ্ঞতা হয়ে দাঁড়ায়। এই নদীর তীরে গড়ে ওঠা আদিবাসী গ্রাম গুলো তাদের সাংস্কৃতি ও ঐতিহ্যের জন্য পর্যটকদের কাছে পছন্দনীয় এবং বিখ্যাত। 

এছাড়াও বান্দরবান জুড়ে রয়েছে অনেক ধর্মীয় দার্শনিক স্থান এর মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলো গোল্ডেন টেম্পল একটি বৌদ্ধমন্দির ইত্যাদি। শুধু প্রাকৃতিক সৌন্দর্যই নয় জাতিগত বৈষম্যের দিক দিয়েও বান্দরবান বিখ্যাত। বান্দরবানে আদিবাসী জনগোষ্ঠীরা তাদের সহজাত প্রবৃত্তির সংস্কৃতি ভাষা খাদ্যাভাস এবং জীবনযাত্রা দিয়ে পর্যটকদের কাছে প্রতি পছন্দনীয় এবং আকর্ষণীয়।

বান্দরবানের দর্শনীয় স্থান নীলাচল

পাহাড়-ঝর্না-নদীর অপরূপ সমন্বয় বান্দরবান।বান্দরবানের যেগুলো পর্যটন কেন্দ্র আছে তার মধ্যে অন্যতম এবং দৃষ্টিনন্দন পর্যটন কেন্দ্র হচ্ছে নীলাচল। এই নীলাচল স্থানটি বান্দরবান শহর থেকে মাত্র দুই কিলোমিটার দূরে অবস্থিত। নীলাচলে অবস্থিত পাহাড় সমূহের চূড়া থেকে বান্দরবান শহরটিকে এবং তার আশেপাশের যে পাহাড়ি অঞ্চল এলাকাগুলো আছে এগুলোর অপরূপ সৌন্দর্য এবং দৃষ্টিনন্দন পরিবেশ উপভোগ করা যায়। 

নীলাচলের পাহাড় থেকে সূর্যোদয় ও সূর্যাস্তের এক অনবদ্য প্রাকৃতিক দৃশ্য উপভোগ করা যায়। নীলাচলের অত্যন্ত মনোরম প্রাকৃতিক সৌন্দর্য এবং শান্ত পরিবেশ এটিকে একটি অনন্য পর্যটন কেন্দ্র হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করেছে। বর্ষাকাল আগমনের পরেই নিলাচল তার নতুন সাজে এবং সৌন্দর্যের পর্যটকদের মুগ্ধ করতে প্রস্তুত হয়। বর্ষাকালে এই নীলাচলের পাহাড় গুলো মেঘের আবরণে ঢাকা থাকে যার সৌন্দর্য অনেক প্রশংসনীয় পর্যটকদের কাছে। 

বছরের বিভিন্ন সময় নিলাচল বিভিন্ন সাজে নিজেকে সাজায়। যার জন্য পর্যটকরা এখানে তাহাই কিং ফটোগ্রাফি করে থাকে এবং এর পাশাপাশি প্রকৃতির সাথে একান্ত মিশে যাওয়ার সুযোগ উপভোগ করে ।নীলাচলের পাদদেশে আদিবাসী জনগোষ্ঠীর বসবাস যাদের সংস্কৃতি সহজ সরল জীবনযাত্রা তাদের বন্ধু সুলভ আচরণ পর্যটকদের নজর কাড়ে। এবং একই পরিবেশে মিশে যাইতে সাহায্য করে যার ফলে এই নীলাচল দেশি-বিদেশি পর্যটকদের কাছে একটি আকর্ষণীয় ভ্রমণের গন্তব্য হিসেবে সুখ্যাতি অর্জন করেছে।

বান্দরবান কিসের জন্য বিখ্যাত

পাহাড়-ঝর্না-নদীর অপরূপ সমন্বয় বান্দরবান।প্রকৃতির অপরূপ সাজে সজ্জিত বান্দরবান বাংলাদেশের দক্ষিণ পূর্বাঞ্চলের একটি পাহাড় পর্বতে ঘেরা একটি জেলা এবং এটি এর প্রাকৃতিক মনোরম পরিবেশের সৌন্দর্য সাংস্কৃতিক বৈচিত্র্য এবং পর্যটকের দৃষ্টি আকর্ষণের জন্য বিখ্যাত ।বাংলাদেশের সর্বোচ্চ বড় পর্বত শৃঙ্গ তাজিংডং, নীলগিরি পাহাড় বোগালেক হ্রদ এবং সূর্যোদয় ও সূর্যাস্তের অপরূপ সৌন্দর্যের স্থান নীলাচল এগুলোর কারণে বাংলাদেশ ও বহির্বিশ্বে বান্দরবান বিখ্যাত। 

এছাড়াও বান্দরবানে রয়েছে আদিবাসী জনগোষ্ঠী যারা তাদের সমৃদ্ধ সংস্কৃতি ও ঐতিহ্য দিয়ে বান্দরবানকে একটি অনন্য পর্যটক কেন্দ্রে প্রতিষ্ঠা করেছে ।এই জনগোষ্ঠীগুলোর মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলো মারমা চাকমা ত্রিপুরা বম সহ বিভিন্ন উপজাতি যারা তাদের নিজস্ব ভাষা পোশাক বন্ধুসুলভ আচরণ সহজাত প্রবৃত্তি উৎসব এবং সংস্কৃতি দিয়ে পর্যটকদের নজর কেড়েছে। 

এবং একই পরিবেশে প্রকৃতির অপরূপ সৌন্দর্য উপভোগ করতে সাহায্য করেছে। বান্দরবান শুধুমাত্র প্রকৃতির সৌন্দর্য বা উপজাতি গোষ্ঠীদের জন্য আলোচিত নয়। বান্দরবান তার হস্তশিল্প দ্বারা বাংলাদেশ সহ বহির্বিশ্বে তার পরিচিতি অর্জন করেছে। বান্দরবানের অবস্থিত আদিবাসী জনগোষ্ঠীর তৈরি হস্তশিল্প যেমন বাস ও বেতের তৈরি বিভিন্ন পণ্য ।

কাঠের তৈরি বিভিন্ন কারু কাজ বা আসবাবপত্র হস্তশিল্পের মধ্যে কাপড় বোনা মাদুর বোনা এসব কিছু দিয়ে বান্দরবান বাংলাদেশ এবং বিশ্বের দরবারে নিজেকে প্রচলিত করেছে ।সৌন্দর্য ও হস্তশিল্পের পাশাপাশি প্রাকৃতিক সম্পদ ও পর্যটকদের জন্য ট্রাকিং আইকিং ফটো শুটিং এবং সাংস্কৃতিক অভিজ্ঞতার সুযোগ থাকায় বান্দরবান কালের বিবর্তনে জনপ্রিয় ইকো ট্যুরিজম হিসেবে নিজেকে অত্যন্ত করেছে।

বান্দরবান ভ্রমণে খরচের পরিমাণ-২০২৪

পাহাড়-ঝর্না-নদীর অপরূপ সমন্বয় বান্দরবান বাংলাদেশের দক্ষিণ-পূর্বাঞ্চলের একটি মনোরম পার্বত্য জেলা, যা প্রাকৃতিক সৌন্দর্যে ভরপুর। ২০২৪ সালে এখানে ভ্রমণের খরচ বিভিন্ন বিষয়ের উপর নির্ভর করে। একজন সাধারণ পর্যটকের জন্য, তিন দিন দুই রাতের ভ্রমণে মোটামুটি ১৫,০০০-২০,০০০ টাকা খরচ হতে পারে। এর মধ্যে থাকবে যাতায়াত, খাবার, থাকার ব্যবস্থা এবং স্থানীয় ভ্রমণের খরচ। বাস বা প্রাইভেট কারে যাতায়াতের খরচ ২,০০০-৪,০০০ টাকা হতে পারে। 

হোটেল বা রিসোর্টে থাকার খরচ দৈনিক ১,৫০০-৩,০০০ টাকা, যা নির্ভর করে আবাসনের মান ও অবস্থানের উপর। খাবারের জন্য দৈনিক ৫০০-১,০০০ টাকা ধরা যেতে পারে। স্থানীয় যানবাহন ও দর্শনীয় স্থান ভ্রমণের জন্য দৈনিক ১,০০০-১,৫০০ টাকা লাগতে পারে। অবশ্য, এই খরচ কম-বেশি হতে পারে ব্যক্তিগত পছন্দ, ভ্রমণের ধরন, এবং মৌসুমের উপর নির্ভর করে। সুতরাং, পরিকল্পনা করার সময় এই বিষয়গুলি বিবেচনা করা উচিত।

একদিনে বান্দরবান ভ্রমণ টিপস

পাহাড়-ঝর্না-নদীর অপরূপ সমন্বয় বান্দরবান বর্তমানে বান্দরবান বাংলাদেশের মধ্যে একটি দৃষ্টিনন্দিত এবং প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের চাদরে ঘেরা মনোরম পরিবেশের একটি পর্যটন কেন্দ্র। বান্দরবানে এত পরিমান দর্শনীয় এবং আকর্ষণীয় স্থান রয়েছে যা এক দিনে ঘুরে শেষ করা অনেক বড় একটা চ্যালেঞ্জিং বিষয়। কিন্তু সময়ের সর্বোত্তম ব্যবহার করেও এর কিছু উল্লেখযোগ্য আকর্ষণীয় স্থান উপভোগ করা যেতে পারে ।সে বিষয়ে নিচে আলোচনা করা হলোঃ

ভ্রমণের যাত্রা শুরু হবে সকাল সকাল বান্দরবান শহরে পৌঁছে। সর্বপ্রথম নিলাচল পাহাড়ে গিয়ে যেখানে থেকে আপনি সূর্যদয় ও চমৎকার পানো রামিক দৃশ্য উপভোগ করতে পারবেন কোন বাধা বিপত্তি ছাড়াই। সূর্যোদয়ের প্রাকৃতিক সৌন্দর্য উপভোগ করার পরে ধর্মের ঐতিহ্য অনুভব করতে বৌদ্ধ ধর্মের বুড্ডা ধাতু জাদি মন্দির পরিদর্শন করুন। 

এতে হয়তোবা আপনি মানসিকভাবে শান্তি ও তৃপ্তি পাবেন। বেলা গড়িয়ে দুপুর হলে আদিবাসী উপজাতীয় জনগোষ্ঠীর খাবারগুলো চোখে দেখুন একটু অন্যরকম মানসিক তৃপ্তি পাবেন এবং তাদের হস্তশিল্পের তৈরি কৃত সামগ্রীগুলো কিনুন। দুপুরের খাবারের পরে কিছুটা বিশ্রাম নিয়ে বিকেলে মেঘলা পর্যটন কমপ্লেক্স এর প্রাকৃতিক পরিবেশ উপভোগ করুন তার পাশাপাশি সেখানে শোবানখ জলপ্রপাত দেখতে পারবেন। 

পাহাড়-ঝর্না-নদীর অপরূপ সমন্বয় বান্দরবনে পরিদর্শন এবং আকর্ষণের জন্য এতগুলো স্থান রয়েছে যেগুলো একদিনে ভ্রমণ করা অসম্ভব একটি বিষয় কিন্তু উপরের উল্লেখিত বিষয়গুলো ফলো করলে হয়তো বা আপনি বান্দরবানের সব কিছুরই কিছু অংশ যেমন সৌন্দর্য সাংস্কৃতিক ঐতিহ্য আতিথিয়তা সবকিছুই স্বাদ পাবেন।

এক নজরে বান্দরবান ভ্রমণের নিষেধাজ্ঞা

পাহাড়-ঝর্না-নদীর অপরূপ সমন্বয় বান্দরবান ভ্রমণের যে নিষেধাজ্ঞাগুলো রয়েছে সে কারণগুলো নিচে উল্লেখ করা হলোঃ
এক নজরে বান্দরবান ভ্রমণের নিষেধাজ্ঞা


  • বান্দরবানের পর্যটন অঞ্চলে নিরাপত্তা পরিস্থিতি অস্থির হয়ে পড়েছে।
  • সেখানকার স্থানীয় সশস্ত্র পুষ্টি এবং সরকারি বাহিনীর মধ্যে সংঘর্ষের ঘটনা অনেকাংশে বৃদ্ধি পেয়েছে।
  • বহু সংখ্যক দর্শনীয় এবং আকর্ষণীয় পর্যটন অঞ্চল থাকায় বান্দরবানে অতিরিক্ত পর্যটকের চাপের কারণে স্থানীয় পরিবেশ ব্যবস্থা ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে।
  • পরিবেশ দূষণ এর কারণে প্রাকৃতিক সৌন্দর্য ও জীব বৈচিত্র্য উপর নেতিবাচক প্রভাব পড়ায় নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়েছে।
  • আদিবাসী জনগোষ্ঠীর সংস্কৃতি ও জীবনযাত্রা রক্ষার্থে এই সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে।
  • অবকাঠামগত সীমাবদ্ধতার কারণে এবং বড় সংখ্যক পর্যটক আগমনের কারণে স্থানীয় পরিষেবা গুলি হুমকির মুখে পড়েছে।

বান্দরবানের আদিবাসী জনগোষ্ঠীর জীবনযাপন

পাহাড়-ঝর্না-নদীর অপরূপ সমন্বয় বান্দরবানে অবস্থিত আদিবাসি জনগোষ্ঠীর জীবনযাত্রা অত্যন্ত বৈচিত্র্য পূর্ণ এর পাশাপাশি এদের জীবনযাত্রা প্রকৃতির সাথে অতপরত ভাবে জড়িত। এই অঞ্চলে বসবাসকারী প্রধান জনগোষ্ঠীগুলো হলো চাকমা মারমা ত্রিপুরা বম ইত্যাদি। জীবিকা নির্বাহের প্রধান উৎস হলো কৃষি এবং বনজ সম্পদ। পাহাড়ের ঢালে জুম চাষ পদ্ধতিতে ধান ভুট্টা কচু আদা হলুদ সহ বিভিন্ন ফসল উৎপাদন করে থাকে এর পাশাপাশি আনারস তেতুল পেয়ারা এ জাতীয় ফল চাষ করে থাকে। 

এগুলো ছাড়াও তারা বাসবেত কার্ড সংগ্রহ করে জীবিকা নির্বাহ করে থাকে। আদিবাসী জনগোষ্ঠীর তাদের সামাজিক অবকাঠামগত কারণে গোষ্ঠীভিত্তিক এবং তাদের সমাজের রীতিনীতি সহ প্রথাগত আইনের মধ্যে সীমাবদ্ধ। তাদের সংস্কৃতি ও ঐতিহ্য সমৃদ্ধ এবং দৃষ্টি নন্দিত এইগুলো প্রথম হলিত হওয়ার মূল উৎস হচ্ছে উৎসব নৃত্যশিল্প সঙ্গীত শিল্প এবং হস্তশিল্প। ধর্মীয় রীতি-নীতি হিসেবে তারা বৌদ্ধ ধর্ম ও প্রকৃতি পূজার ওপর নির্ভরশীল। 

এই উপজাতি জনগোষ্ঠীর ক্রমাগতভাবে আধুনিকতার ছোঁয়া নিজেদের জীবন যাপনের বিভিন্ন অংশে প্রয়োগ করছে যার ফলে শিক্ষা চিকিৎসা ইত্যাদিতে আস্তে আস্তে সমৃদ্ধি লাভ করছে। তবে সবকিছুর পরও এদের গোষ্ঠী গত ও স্বভাবগত যেটা চাহিদা সম্পদ ভিত্তিক জীবিকা নির্বাহ হুমকির মুখে পড়ছে এর অনেক বড় কারণ হচ্ছে জলবায়ু পরিবর্তনের। যার ফলে তারা প্রতিনিয়ত সাংস্কৃতিক ঐতিহ্য ও প্রাকৃতিক সম্পদ সংরক্ষণের চেষ্টায় নিজেদেরকে অব্যাহত রাখছে যা বাংলাদেশের সাংস্কৃতিতে অনেক গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখছে ।

বান্দরবানে চাষাবাদ কৃত ফসল ও ফল

পাহাড়-ঝর্না-নদীর অপরূপ সমন্বয় বান্দরবান জেলা পাহাড়ের প্রাকৃতিক সৌন্দর্যে ঘিরে থাকায় এর জলবায়ু কৃষি ক্ষেত্রে ফসল উৎপাদন ও ফল চাষে অনেক বড় ভূমিকা পালন করে। বান্দরবানের পাহাড়ি অঞ্চলে বিভিন্ন ধরনের ফসল ও ফল চাষ করে থাকে। এর মধ্যে প্রধান ফসলগুলোর হল ধান ভুট্টা আলু আদা হলুদ এবং কাপাস। পাহাড়ি অঞ্চলে জুম চাষ বেশ জনপ্রিয় এবং পুরানো চাষের পদ্ধতি।

যার ফলে এ পদ্ধতিতে কাজে লাগিয়ে একাধিক ফসল একসাথে চাষ করে থাকে।বান্দরবানে উৎপাদিত কমলার বিশেষত্ব সারা বাংলাদেশে ছড়িয়ে আছে এর সুস্বাদু হওয়ায় এবং এর গুণগতমান ভালো হওয়ায় দেশব্যাপী এর চর্চা আছে। কমলার পাশাপাশি বান্দরবানে আনারস পেয়ারা লিচু আম কলা এবং মাল্টা চাষ করা হয়। 

পাহাড়ের গায়ে চাষ করার ফলে উচ্চতা ও জলবায়ু বিভিন্ন ধরনের ফসলের জন্য অনুকূল পরিবেশ সৃষ্টি করে যার ফলে বিভিন্ন রকম ফলের চাষ এবং এর গুণগতমান ঠিক থাকে। বর্তমানে স্থানীয় কৃষকরা প্রাচীন পদ্ধতি এবং আধুনিক প্রযুক্তি সমন্বয়ে চাষাবাদ করে এবং বান্দরবানের পাহাড়ের জলবায়ুর অনুকূল পরিবেশকে কাজে লাগিয়ে ফসল এবং ফল উৎপাদন করে শুধু স্থানীয় চাহিদা না বরং দেশের অন্যান্য অংশ রপ্তানি করে দেশের বিভিন্ন ক্ষেত্রে চাহিদা মেটাচ্ছে এবং অর্থনৈতিকভাবে লাভবান হচ্ছে। 

বাংলাদেশের অর্থনীতিতে বান্দরবানের অবদান

পাহাড়-ঝর্না-নদীর অপরূপ সমন্বয় বান্দরবান ।পার্বত্য জেলাগুলোর মধ্যে বাংলাদেশের একটি গুরুত্বপূর্ণ জেলা।যা বাংলাদেশের অর্থনীতিতে উল্লেখযোগ্য অবদান রাখছে। বান্দরবানের অর্থনৈতিক কার্যক্রম গুলোর মধ্যে প্রধান হল কৃষি ও পর্যটন। বান্দরবানে পাহাড়ি এলাকায় জুম চাষের মাধ্যমে একাধিক ফসল উৎপাদন করা হচ্ছে তার মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলো চাল ভোটটা আদা হলুদ ও অন্যান্য ফসল। 

এছাড়াও এই অঞ্চলের পরিবেশ বিভিন্ন ফল ও শাকসবজির জন্য সহনীয় যা বিভিন্ন ফল ফলাদি উৎপাদনে ব্যাপক প্রভাব ফেলে ।এর ফলে উৎপাদিত সামগ্রী স্থানীয় বাজারসহ দেশের বিভিন্ন প্রান্তে জাতীয় বাজারে সরবরাহ করার ফলে আর্থিকভাবে স্বাবলম্বী হয়ে উঠছে। কৃষি এবং পর্যটন শিল্প বান্দরবানের অর্থনীতিতে একে অপরের পরিপূরক কৃষির পাশাপাশি পর্যটন শিল্পটাও বান্দরবান সহ দেশের অর্থনীতিতে ব্যাপক ভূমিকা পালন করে ।
বান্দরবানে চাষাবাদ কৃত ফসল ও ফল


এখানের অপরূপ সৌন্দর্য এবং পাহাড় পর্বত মালা গুলোর জন্য প্রতিবছর লাখ লাখ পর্যটক অঞ্চলে আসে। যার ফলে স্থানীয় হোটেল এবং বিভিন্ন ভাবে কর্মসংস্থান ও আয়ের সৃষ্টি হয়। এগুলো ছাড়াও বান্দরবানের আদিবাসীদের হস্তশিল্পের গুনাগুন সারা দেশব্যাপী ছড়িয়ে আছে বাসের তৈরি বেতের তৈরি পণ্যসহ হাতের বোনা কাপড় মাদুর সহ বিভিন্ন জিনিস দেশের অর্থনীতিতে ব্যাপক ভূমিকা পালন করে।

লেখক এর শেষ কথা

পাহাড়-ঝর্না-নদীর অপরূপ সমন্বয় বান্দরবান প্রাকৃতিক সৌন্দর্য ও বিভিন্ন পর্যটক কেন্দ্র দেশে এবং বিদেশে দর্শনার্থীদের মন কেড়েছে একান্ত ভাবে। পাহাড় ঝর্ণা নদী অপরূপ সমন্বয় বান্দরবান দেশবাসী এবং বিদেশেও যেরকম বিখ্যাত উঠেছে তেমনি দেশের অর্থনীতিতে ব্যাপক ভূমিকা পালন করছে। 

আমার ভ্রমণ প্রিয় ভিউয়ার্সদের জন্য বান্দরবান সম্পর্কে আলোচনা উপস্থাপন করেছে। আশা করছি এই আর্টিকেল আপনাদের প্রয়োজনে আসবে। আপনার সুস্বাস্থ্য কামনা করে এই আলোচনা আজকে এখানে শেষ করছি।








এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

অর্ডিনারি আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url